আধুনিক অর্থনীতির জনক বলা হয় কাকে

Estimated read time 1 min read


অর্থনীতি: সহজে বোঝার চেষ্টাঅর্থনীতি হল জীবনের সাধারণ ব্যবসায় মানুষের একটি অধ্যয়ন। তিনি কীভাবে তার আয় পান এবং কীভাবে তিনি তা ব্যবহার করেন তা অনুসন্ধান করে। সুতরাং, এটি একদিকে, সম্পদের অধ্যয়ন এবং অন্যদিকে এবং আরও গুরুত্বপূর্ণ দিক, মানুষের অধ্যয়নের একটি অংশ।

অর্থনীতি শব্দটি শুনলে আমাদের মনে হয় এটি খুব জটিল একটা বিষয়। কিন্তু আসলে অর্থনীতি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে খুব ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। সহজ কথায়, অর্থনীতি হলো আমরা কীভাবে আমাদের সীমিত সম্পদ দিয়ে সবচেয়ে বেশি উপকার পেতে পারি, সেই বিষয়ে আলোচনা করা।

আধুনিক অর্থনীতির জনক কে

অর্থনীতির জনক কে? অর্থনীতির জনক হিসেবে একজনকে নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন, কারণ অর্থনীতি একটি বিশাল এবং বহুমাত্রিক বিষয়, যার উৎপত্তি এবং বিকাশের ইতিহাস খুবই দীর্ঘ। তবে, বিভিন্ন সময়ে এবং বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিভিন্ন অর্থনীতিবিদকে অর্থনীতির ভিত্তি প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

কয়েকজন উল্লেখযোগ্য অর্থনীতিবিদ: অ্যাডাম স্মিথ: তাকে আধুনিক অর্থনীতির জনক বলে মনে করা হয়। তার “দ্য ওয়েলথ অফ নেশনস” বইটি অর্থনীতির ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক। তিনি মুক্ত বাজার এবং স্বার্থপরতা অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির চাবিকাঠি বলে মনে করতেন।
কার্ল মার্ক্স: তিনি সমাজতন্ত্র এবং কমিউনিজমের তত্ত্ব প্রবর্তন করেছিলেন। তার “দ্য কম্যুনিস্ট ম্যানিফেস্টো” এবং “দ্য ক্যাপিটাল” বই দুটি অর্থনীতি এবং সমাজবিজ্ঞানের উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে।
জন মেইনার্ড কেইন্স: তিনি মহামন্দার সময় সরকারি ব্যয় বাড়িয়ে অর্থনীতিকে উদ্দীপ্ত করার তত্ত্ব প্রবর্তন করেছিলেন। তার তত্ত্ব আধুনিক ম্যাক্রোইকনমিক্সের ভিত্তি স্থাপন করেছে।
এছাড়াও, অর্থনীতির বিভিন্ন শাখায় বিভিন্ন অর্থনীতিবিদদের অবদান উল্লেখযোগ্য:

মাইক্রোইকনমিক্স: আলফ্রেড মার্শাল, পল স্যামুয়েলসন
ম্যাক্রোইকনমিক্স: জন মেইনার্ড কেইন্স, মিল্টন ফ্রিডম্যান
বিকাশ অর্থনীতি: সিমন কুজনেটস, অ্যামার্তিয়া সেন
সুতরাং, অর্থনীতির জনককে একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত করা যায় না। বরং, অর্থনীতির বিভিন্ন দিকে বিভিন্ন অর্থনীতিবিদদের অবদানের ফলেই আজকের অর্থনীতির ধারণা গড়ে উঠেছ।

অর্থনীতি কাকে বলে

অর্থনীতি বা অর্থশাস্ত্র হলো সামাজিক বিজ্ঞানের একটি শাখা, যেখানে পণ্য এবং সেবার উৎপাদন, সরবরাহ, বিনিময়, বিতরণ এবং ভোগ ও ভোক্তার আচরণ নিয়ে আলোচনা করা হয়। সহজ কথায়, আমরা কীভাবে আমাদের সীমিত সম্পদ দিয়ে সবচেয়ে বেশি উপকার পেতে পারি, সেই বিষয়ে অর্থনীতি আমাদের শিক্ষা দেয়।

অর্থনীতি কেন গুরুত্বপূর্ণ? দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োগ: অর্থনীতি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে। আমরা কী কিনব, কীভাবে বিনিয়োগ করব, সরকারের নীতি আমাদের জীবনে কী প্রভাব ফেলবে, এসব কিছুই অর্থনীতির মূল বিষয়।
সরকারি নীতি নির্ধারণ: সরকার বিভিন্ন অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণ করে দেশের অর্থনীতি সুস্থ রাখতে। অর্থনীতি জানা থাকলে আমরা সরকারের এই নীতিগুলো বুঝতে পারি এবং তাদের প্রভাব সম্পর্কে জানতে পারি।
ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত: ব্যবসায়ীরা অর্থনীতির জ্ঞান ব্যবহার করে তাদের ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নেয়। কোন পণ্য উৎপাদন করবে, কত দামে বিক্রি করবে, কোন বাজারে প্রবেশ করবে, এসব সিদ্ধান্ত নিতে অর্থনীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সামাজিক সমস্যা সমাধান: অর্থনীতি সামাজিক সমস্যা যেমন দারিদ্র্য, বেকারত্ব, অসামান্যতা সমাধানে সহায়তা করে।
অর্থনীতির দুটি প্রধান শাখা:

ব্যক্তিগত অর্থনীতি: এটি ব্যক্তি, পরিবার বা কোনো নির্দিষ্ট সংস্থার অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা করে।
ম্যাক্রোইকনমিক্স: এটি সমগ্র অর্থব্যবস্থার কার্যকলাপ নিয়ে আলোচনা করে। যেমন, জাতীয় আয়, মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব ইত্যাদি।

ব্যষ্টিক অর্থনীতির জনক কে

অর্থনীতির জনক হিসেবে সাধারণত অ্যাডাম স্মিথকেই গণ্য করা হয়। তিনিই প্রথম ব্যক্তিগত স্বার্থ ও অদৃশ্য হাতের ধারণা দিয়ে অর্থনীতির একটি বৈজ্ঞানিক ভিত্তি গড়ে তোলেন। তাঁর বিখ্যাত বই (The Wealth of Nations) অর্থনীতির ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়।

কেন অ্যাডাম স্মিথকে অর্থনীতির জনক বলা হয়?

বাজার অর্থনীতির ধারণা: তিনিই প্রথম বাজার অর্থনীতির ধারণা এবং এর স্বয়ংক্রিয় কার্যকলাপ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেন।
অদৃশ্য হাতের ধারণা: স্মিথের মতে, ব্যক্তিগত স্বার্থই বাজারকে চালিত করে এবং এক অদৃশ্য হাতের মতো সমাজের কল্যাণকে বৃদ্ধি করে।
মুক্ত বাজারের পক্ষপাতিত্ব: তিনি মুক্ত বাজারকে সবচেয়ে কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে মনে করতেন।
তবে মনে রাখতে হবে:

অর্থনীতি একটি বিস্তৃত বিষয়: অর্থনীতির ইতিহাসে অনেক বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ রয়েছেন, যাদের অবদান অপরিসীম।
বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি: অর্থনীতির বিভিন্ন শাখা এবং বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অর্থনীতিবিদদের দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন হতে পারে।

ব্যষ্টিক অর্থনীতি কাকে বলে

ব্যক্তিগত অর্থনীতি: এক নজরে
ব্যক্তিগত অর্থনীতি হলো অর্থনীতির একটি শাখা যেখানে আমরা ব্যক্তি, পরিবার বা কোনো নির্দিষ্ট সংস্থার অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা করি। সহজ কথায়, এটি হলো আমরা কীভাবে আমাদের সীমিত সম্পদ দিয়ে সবচেয়ে বেশি উপকার পেতে পারি, সেই বিষয়ে ব্যক্তিগত পর্যায়ে আলোকপাত করা।

ব্যক্তিগত অর্থনীতিতে আমরা কী কী শিখি? বাজার: কীভাবে বাজারে পণ্য ও সেবার দাম নির্ধারিত হয়, কীভাবে ভোক্তারা তাদের সিদ্ধান্ত নেয়, এসব বিষয় ব্যক্তিগত অর্থনীতিতে আলোচনা করা হয়।
সুযোগ ব্যয়: কোনো একটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে আমরা অন্য কোনো সুযোগ হারিয়ে ফেলি, এই হারানো সুযোগকে সুযোগ ব্যয় বলে।
উপযোগ: কোনো পণ্য বা সেবা ব্যবহার করে আমরা যে সন্তুষ্টি পাই, তাকে উপযোগ বলে।
বাজেট: আমাদের সীমিত আয়ের মধ্যে কীভাবে ব্যয় করব, সেই বিষয়ে বাজেট তৈরি করা শিখি।
বিনিয়োগ: ভবিষ্যতে আরো বেশি উপার্জন করার জন্য কীভাবে বিনিয়োগ করব, সেই বিষয়েও ব্যক্তিগত অর্থনীতি আমাদের শিক্ষা দেয়।
ব্যক্তিগত অর্থনীতি কেন গুরুত্বপূর্ণ? দৈনন্দিন জীবন: আমরা প্রতিদিনই অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নেই। কী কিনব, কোন ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলব, কোন বীমা পলিসি নেব, এসব সিদ্ধান্ত নিতে ব্যক্তিগত অর্থনীতির জ্ঞান খুবই কাজে লাগে।
আর্থিক নিরাপত্তা: ব্যক্তিগত অর্থনীতি আমাদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। আমরা কীভাবে বাজেট করব, কীভাবে সঞ্চয় করব, কীভাবে ঋণ পরিশোধ করব, এসব বিষয় জানলে আমরা ভবিষ্যতে আর্থিক সমস্যায় পড়ার ঝুঁকি কমাতে পারি।

ব্যষ্টিক অর্থনীতি (বা ক্ষুদ্র অর্থনীতি) অর্থনীতির একটি মৌল শাখা যাতে ব্যক্তি এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ভোগ ও উপযোগ, উৎপাদন, মূল্য, মুনাফা ইত্যাদির নিয়ামক নিয়ে আলোচনা করা হয়। বাজার অর্থনীতিতে বাজারে পণ্যের ও সেবার বিনিময় ঘটে। পণ্যের ও সেবা থেকে ব্যক্তি বা ভোক্তা উপযোগ লাভ করে। বাজরে পণ্য ও সেবা বিনিময়ের প্রধান দুটি নিয়ামক হলো ব্যক্তির (বা পরিবারের) পণ্য বা সেবার চাহিদা ও উৎপাদক কর্তৃক সেসবের যোগান।

অন্য দিকে, সামষ্টিক অর্থনীতি অন্তর্ভুক্ত করে “ অর্থনৈতিক কার্যক্রমের সবগুলোর যোগফলকে, প্রবৃদ্ধি, মুদ্রাষ্ফীতি ও বেকার সমস্যা বিষয়ক তত্বাবধান এবং এইসব বিষয়ে সম্পর্কযুক্ত জাতীয় অর্থনৈতিক নীতিসমুহ” এবং ইহা সরকারি কার্যক্রম (যেমন, কর স্তর পরিবর্তন) কে প্রভাবিত করে। বিশেষ করে লুকাস সমালোচনায় বলা হয় যে, বেশির ভাগ আধুনিক সামষ্টিক অর্থনীতি তত্ত্বসমুহ ব্যষ্টিক অবকাঠামোর উপর প্রতিষ্ঠিত – ইহা ব্যষ্টিক-স্তর আচরনের অনুমিত শর্তসমুহের ভিত্তি।

ব্যষ্টিক অর্থনীতির একটি লক্ষ হচ্ছে যে, বাজার প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ করা যা পণ্য ও সেবার সম্পর্কযুক্ত মূল্য নির্ধারণ করে এবং সীমিত সম্পদের বিকল্প ব্যবহারের জন্য বণ্টন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে। ব্যষ্টিক অর্থনীতি বাজার ব্যর্থতাকে বিশ্লেষন করে, যেখানে বাজার দক্ষ ফলাফল তৈরীতে ব্যর্থ হয়, যেমন পূর্ণ প্রতিযোগিতার জন্য প্রয়োজনীয় তাত্ত্বিক শর্ত বর্ণনা। ব্যষ্টিক অর্থনীতির উল্লেখযোগ্য ক্ষেত্র সমুহ হচ্ছে বিচ্ছিন্ন তথ্যের বাজার,সাধারণ ভারসাম্য, অনিশ্চয়তায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং ক্রীড়াতত্ত্বের অর্থনৈতিক ব্যবহার। ইহা ছাড়াও ব্যষ্টিক অর্থনীতিতে বাজার প্রক্রিয়ার সাথে পণ্যের স্থিতিস্থাপকতা নিয়ে আলোচনা করা হয়।

আরো জানতে ক্লিক করুন- বিশুদ্ধ পানির বৈশিষ্ট্য কি / ভোটার স্থানান্তর অনলাইন আবেদন / পুরাতন ভোটার আইডি কার্ড চেক এবং স্মার্ট কার্ড সেবা অ্যাপ / আফগানি পামির কোলা / মুদ্রাস্ফীতি কিভাবে হয় এবং মুদ্রাস্ফীতি হলে কি হয়?

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours