শবে বরাত অর্থ কি : ১. মুক্তির রাত: ফার্সি ভাষা: ‘শব’ শব্দের অর্থ রাত।
আরবি ভাষা: ‘বারাআত’ শব্দের অর্থ মুক্তি।
এই রাতে আল্লাহ তায়ালা অগণিত মানুষের গুনাহ ক্ষমা করে দেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। তাই একে ‘মুক্তির রাত’ বলা হয়।
২. ভাগ্যের রাত: আরবি ভাষা: ‘বারাআত’ শব্দের অর্থ ভাগ্য, বণ্টন, নির্ধারিত।
এই রাতে আল্লাহ তায়ালা পরবর্তী এক বছরের ভাগ্য লিপিবদ্ধ করেন বলে ধারণা করা হয়। তাই একে ‘ভাগ্যের রাত’ও বলা হয়।
শবে বরাতের তাৎপর্য: মুসলিমদের কাছে শবে বরাত একটি গুরুত্বপূর্ণ রাত। এই রাতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন। ক্ষমা প্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করে দেন। অনুগ্রহ প্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন। বিদ্বেষ পোষণকারীদের তাদের অবস্থাতেই ছেড়ে দেন।
শবে বরাতের আমল
- রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগি করা।
- নফল নামাজ পড়া।
- কোরআন তিলাওয়াত করা।
- দোয়া ও মোনাজাত করা।
- তস্বীহ ও তাহলীল করা।
- দান-খয়রাত করা।
- গরিব-দুঃখীদের খাওয়ানো।
উল্লেখ্য: শবে বরাত পালনের ক্ষেত্রে কিছু ভ্রান্ত ধারণা ও রীতিনীতি প্রচলিত আছে।
যেমন: আতশবাজি ফোটানো, লাইটিং করা, হালুয়া-রুটি বিতরণ করা ইত্যাদি।
এসব রীতিনীতির কোনো শাস্ত্রীয় ভিত্তি নেই।
তাই শবে বরাত পালনের ক্ষেত্রে সঠিক জ্ঞান অর্জন করা জরুরি।
শবে বরাত কি বিদআত
শবে বরাত বিদআত কিনা, এই প্রশ্নের উত্তর নির্ভর করে কোন দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করা হচ্ছে তার উপর।
যারা শবে বরাতকে বিদআত মনে করেন: তাদের যুক্তি হলো, হাদিসে শবে বরাতের নির্দিষ্ট কোন আমলের উল্লেখ নেই। শবে বরাত পালনের বর্তমান রীতিনীতি, যেমন: আতশবাজি ফোটানো, লাইটিং করা, হালুয়া-রুটি বিতরণ করা ইত্যাদি – এসবের কোনো শাস্ত্রীয় ভিত্তি নেই। তাই এসব রীতিনীতি বিদআত বা নবপ্রবর্তন।
যারা শবে বরাতকে বিদআত মনে করেন না: তাদের যুক্তি হলো, হাদিসে শবে বরাতের ফজিলতের কথা বলা হয়েছে। যেমন: আল্লাহ তায়ালা এই রাতে তাঁর বান্দাদের প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন, ক্ষমা প্রার্থীদের ক্ষমা করেন, অনুগ্রহ প্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন। তাই এই রাতকে বিশেষভাবে ইবাদত-বন্দেগিতে কাটানো উচিত। তবে, ইবাদত-বন্দেগির ক্ষেত্রে শাস্ত্রের নির্দেশাবলী মেনে চলা জরুরি।
মধ্যম পন্থা: কিছু আলেম মধ্যম পন্থা অবলম্বন করেছেন।
তাদের মতে, শবে বরাতের ফজিলতের কথা হাদিসে বলা হলেও, এর নির্দিষ্ট কোন আমল নেই।
তাই, এই রাতে সাধারণ রাতের মতো ইবাদত-বন্দেগি করা যাবে।
তবে, বিদআতী রীতিনীতি থেকে বিরত থাকা উচিত।
উপসংহার: শবে বরাত পালনের ব্যাপারে বিভিন্ন মতামত প্রচলিত আছে। কোন মতামত সঠিক, তা নির্ধারণ করা ব্যক্তির নিজস্ব বিচারের উপর নির্ভর করে। তবে, শাস্ত্রের নির্দেশাবলী মেনে চলা এবং বিদআতী রীতিনীতি থেকে বিরত থাকাই উচিত।
আরো জানুনঃ শবে বরাতের নামাজের নিয়ম । শবে বরাতের আমল । শবে বরাত কত তারিখে । শবে বরাতের ইতিহাস ।
+ There are no comments
Add yours